24 C
Dhaka
Saturday, April 1, 2023

অবিলম্বে সিরিয়ায় নতুন সামরিক অভিযান হবে: এরদোয়ান

তুরস্কের নিয়ন্ত্রণাধীন দু’টি অঞ্চলকে সংযুক্ত করার প্রয়াসে সিরিয়ায় একটি নতুন সামরিক অভিযান শুরু করার পরিকল্পনা করছে আঙ্কারা। সোমবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এমন তথ্য দিয়েছেন। তার এমন বিবৃতির কারণে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে নতুন করে সঙ্ঘাতের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এরদোয়ান বলেন, ‘তুরস্কের সঙ্গে থাকা সিরিয়ার সীমান্তে ৩০ কিলোমিটার (২০ মাইল) ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠা করার জন্য এ সামরিক অভিযান পরিচালিত হবে।’

তিনি বলেন, আমাদের দক্ষিণ সীমান্তে ৩০ কিলোমিটার গভীর নিরাপদ অঞ্চলে আমরা যে প্রকল্পটি শুরু করেছি, তার অসম্পূর্ণ অংশগুলোর বিষয়ে আমরা শীঘ্রই নতুন পদক্ষেপ নেব।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এ অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। তবে তিনি বলেছেন, তুরস্কের সামরিক, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর এ অভিযান শুরু হবে।

যে অঞ্চলে প্রস্তাবিত তুর্কি সামরিক অভিযান পরিচালিত হবে তা মূলত ‘সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স’ নামের একটি সংগঠন নিয়ন্ত্রিত। এ সংগঠনটি ‘পিপলস প্রোটেকশন ইউনিট’-এর অন্তর্ভুক্ত একটি অঙ্গ-সংগঠন। এ কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ওয়াইপিজি নামেও পরিচিত।

তুরস্ক ওয়াইপিজিকে নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) একটি শাখা হিসেবে বিবেচনা করে। পিকেকেকে তুরস্ক একটি উগ্রবাদী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে। পিকেকে ১৯৪৮ সাল থেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে। এ সংঘাতে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ মারা গেছে।

এরদোয়ানের এমন মন্তব্যের জবাবে ‘সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স’ (এসডিএফ) বলেছে, উত্তর সিরিয়ায় কোনো ‘কৌশলগত পরিবর্তন’ হয়নি। এখন তুরস্ক এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করছে।

২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত উত্তর সিরিয়ায় তুর্কি বাহিনী তিনটি বড় সামরিক অভিযান চালিয়েছে। এসআইএল (আইএসআইএস) ও ওয়াইপিজি-এর হুমকি থেকে সীমান্তকে সুরক্ষিত করার জন্য এসব অভিযান পরিচালিত হয় এবং সীমান্ততে নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়। ওই অভিযানগুলোর মাধ্যমে এ অঞ্চল থেকে কুর্দি উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এ অঞ্চলটি এখন তুরস্ক সমর্থিত ও অনুগত সিরিয়ান গোষ্ঠীগুলো দ্বারা পরিচালিত।

এর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ঘোষণা করেছিলেন যে তার সরকার দেশটিতে থাকা এক মিলিয়ন (১০ লাখ) সিরীয় শরণার্থীকে তাদের দেশে ফিরে যেতে উত্সাহিত করছে। তাদের জন্য উত্তর সিরিয়ায় তুরস্কের দখলকৃত ‘নিরাপদ অঞ্চলে’ শরণার্থী বসতি স্থাপন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

আঙ্কারা গ্যারান্টি দিয়েছে যে স্বেচ্ছায় এমন তুর্কি প্রস্তাব গ্রহণকারী সিরীয় শরণার্থীদের পরিবহন, আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদান করা হবে। ওই অঞ্চলে কয়েক হাজার ইটের ঘর তৈরি করেছে তুর্কি সরকার। এছাড়া সেখানে শত শত স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কয়েক ডজন হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। এ ‘নিরাপদ অঞ্চলে’ ৫০ হাজার কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করা হয়েছে। সেখানে যাওয়ার পর ওই সিরীয় শরণার্থীদের একটি স্বাভাবিক জীবন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।

সূত্র : আল-জাজিরা

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Leave a Reply

লেখক থেকে আরো