অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জাকির হোসেন(৪৫)বগুড়ায় প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে খুন হন। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে চাকুসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-বগুড়া শাজাহানপুরের কৈগাড়ী পূর্বপাড়া এলাকার শহিদুল ইসলাম খোকনের ছেলে মোস্তফা কামাল ওরফে কমল (২৫)। মৃত মিলনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ওরফে আশা (২৪)গ্রেফতারকৃত আশার বিরুদ্ধে এর আগেও একটা অস্ত্র মামলা রয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় খুন হন চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলা সাথিয়াখালি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে ৷ তিনি শাকপালা ক্যান্টনমেন্ট পাড়া এলাকায় বসবাস করতেন ৷ ২০১৪ সালে ল্যান্স কর্পোরাল হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে তিনি অবসরে যান৷
পুলিশ সুপার আলী হায়দার জানান, জাকিরের সাথে নারী সদস্যদের দিয়ে একটি প্রতারক চক্র সখ্যতা গড়ে তোলে। সেই সূত্র ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাকিরকে প্রতারণা চক্রের নারী সদস্য আখি (ছদ্মনাম) ও সালমা (ছদ্মনাম) কৈগাড়ী জবান স্কুলের পাশের একটি ভাড়া বাসায় ডেকে নেন। এরপর নারী সদস্যরা কৌশলে চক্রের অন্য সদস্যদের রুমের ভিতরে ঢুকার জন্য মুঠোফোনে বার্তা বা মিসডকল দিয়ে সিগনাল দেয়। এরপর প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যরা রুমের ভিতর প্রবেশ করে এবং অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তুলে হুমকি প্রদান করে। তখন তারা জাকিরের কাছ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা এবং পরে বিকাশের মাধ্যমে আরও দশ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে তারা জাকিরকে ফুলতলা মোড়ে নিয়ে আসলে ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে গ্রেফতারকৃত আশরাফুল জাকিরকে ধাওয়া করে পিঠে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় দুই ব্যক্তি জাকিরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহত জাকিরের স্ত্রী মমতাজ বেগম অজ্ঞাতদের আসামী করে শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরেই জেলা গোয়েন্দা ও শাজাহানপুর থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দুই আসামী আশা ও কমলকে চাকুসহ গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারকৃত দুইজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা আরও জানিয়েছে তাদের এ চক্রে আটজন সদস্য রয়েছে। এই চক্রের সবাই মিলে দীর্ঘদিন ধরে নারী সদস্যদের দিয়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যক্তিদের টার্গেট করে সখ্যতা গড়ে তুলে বাসাবাড়িতে ডেকে নিতেন। এরপর ওই ব্যক্তির সাথে চক্রটির নারী সদস্যের ঘনিষ্ট হওয়ার আপত্তিকর ছবি তুলে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন। এই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শনিবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে এসব তথ্য জানান সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী।