23 C
Dhaka
Wednesday, March 22, 2023

বাণিজ্যিকভাবে অনেকেই এবার লেবুর চাষ করে লাভবান হচ্ছেন

আমাদের দেশে লেবু একটি জনপ্রিয় ও ভিটামিনযুক্ত ফল। বাণিজ্যিকভাবে অনেকেই আবার লেবুর চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক লোক। দৈনিক গড়ে ৫০ গ্রাম বাতাবিলেবু খেলেই প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হয়।শিশুদের খাদ্যে দৈনিক ২০ মিলিগ্রাম এবং গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের জন্য দৈনিক ৫০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে এবং দাঁত, মাড়ি ও পেশী মজবুত করে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং দেহের ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে।

আসুন জেনে নেই বাতাবি লেবুর চাষ সম্পর্কে গাছের আকৃতি ছাতার মতো। পাতা গাঢ় সবুজ, ডানাযুক্ত বৃত্তাকার। এ জাতের গাছে নিয়মিত ফল ধরে।ফাল্গুন (ফেব্রম্নয়ারি) মাসে এ জাতের গাছে ফুল আসে এবং ভাদ্র-আশ্বিন (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) মাসে ফল সংগ্রহ করা যায়।এ ফলের আকৃতি গোলাকার, মাঝারি ধরনের। ফলের শাঁস সাদা, রসালো, সুস্বাদু, মিষ্টি এবং সম্পূর্ণ তিতাবিহীন।

ফলের ওজন ৮৫০-১১০০ গ্রাম এবং পাকা ফলের রঙ হলদে ভাবাপন্ন।গাছপ্রতি ফলের সংখ্যা ৫০-৫৫টি হালকা দো-আঁশ থেকে পলি দো-আঁশযুক্ত, সুনিষ্কাশিত ও জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ মাটি বাতাবি লেবু চাষের জন্য উত্তম। তবে মধ্যম অমস্নীয় মাটিতে এটি ভালো জন্মে।

বাংলাদেশের জলবায়ু বাতাবি লেবু চাষের জন্য বেশি উপযোগী।বাতাবি লেবুর চারা রোপণের জন্য উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে সমতল ও আগাছামুক্ত করে চারা রোপণের জন্য গর্ত তৈরি করতে হবে।গুটি কলম, জোড় কলম ও চোখ কলমের সাহায্যে বংশবিসত্মার করা হয়। সাধারণত ৮-১০ মাস বয়সের বাতাবি লেবুর চারা বডি ও গ্রাফটিংয়ের জন্য আদিজোড় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। রোপণের জন্য সোজা ও দ্রম্নত বৃদ্ধি সম্পন্ন চারা বা কলম রোপণ করা হয়।সমতল জমিতে বর্গাকার অথবা আয়তাকার পদ্ধতি অথবা পাহাড়ি জমিতে কন্টুর পদ্ধতিতে বাতাবি লেবুর চারা/কলম রোপণ করা হয়।মধ্য জ্যৈষ্ঠ-আশ্বিন (জুন-সেপ্টেম্বর) মাস চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। প্রতি গর্তে জৈব সার ১০-১৫ কেজি, টিএসপি-২৫০ গ্রাম এবং এমপি ২৫০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়। সারগুলো ভালো করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে। বিভিন্ন বয়সের গাছের জন্য সারের মাত্রা পরবর্তী পৃষ্ঠায় দেয়া হলো।সার একেবারে গাছের গোড়ায় না দিয়ে যতদূর পর্যনত্ম ভালোভাবে গাছের ডালপালা বিসত্মার লাভ করেছে সে এলাকার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।

উল্লেখিত সার সমান তিন কিসিত্মতে মধ্য মাঘ থেকে মধ্য ফাল্গুন (ফেব্রম্নয়ারি), মধ্য বৈশাখ থেকে মধ্য জ্যৈষ্ঠ (মে) ও মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য কার্তিক (অক্টোবর) মাসে প্রয়োগ করতে হবে।গাছের গোড়ায় আগাছা জন্মালে তা তুলে ফেলতে হবে। কারণ এরা খাদ্য ও পানি গ্রহণে অংশীদার হয় এবং গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি অব্যাহত করে। চারা রোপণের পর প্রথম দিকে গাছের গোড়ার মাটি ঝুরঝুরে রাখলে নতুন চারা দ্রম্নত বাড়তে পারে। তাই সেচ দেয়ার পর জমিতে জো এলে হালকাভাবে কুপিয়ে জমির চটা ভেঙে দিতে হবে। এতে মাটির পানি ধারণড়্গমতা বেড়ে যাবে এবং গাছ সহজে খাদ্য সংগ্রহ করতে পারবে।

ফুল আসা ও ফল ধরার সময় পানির অভাব হলে ফল ঝরে পড়ে। চারা লাগানোর সময়, সার দেয়ার পর এবং খরার সময় ১০-১৫ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। বাতাবি লেবু জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। বিধায় বৃষ্টিতে ও বর্ষার সময় গাছের গোড়ায় যাতে পানি জমতে না পারে সেজন্য নালা করে পানি নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে।

দৈনিক সত্যের সকাল / রাশিদুজ্জামান (খুলনা)

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Leave a Reply

লেখক থেকে আরো