29 C
Dhaka
Thursday, March 23, 2023

বিদ্রোহী কবিতা – কাজী নজরুল ইসলাম

বিদ্রোহী কবিতা – লেখকঃ কাজী নজরুল ইসলাম

বিদ্রোহী কবিতা কাজী নজরুল ইসলাম এর বিখ্যাত কবিতাসমূহের একটি। কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২২ সালের ৬ জানুয়ারি বিজলী পত্রিকায়। এরপর কবিতাটি মাসিক প্রবাসী (মাঘ ১৩২৮), মাসিক সাধনা (বৈশাখ ১৩২৯) ও ধূমকেতুতে (২২ আগস্ট ১৯২২) ছাপা হয়। প্রকাশিত হওয়া মাত্রই এটি ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি করে। দৃপ্ত বিদ্রোহী মানসিকতা এবং অসাধারণ শব্দবিন্যাস ও ছন্দের জন্য আজও বাঙালি মানসে কবিতাটি “চির উন্নত শির” বিরাজমান।

বিদ্রোহী কবিতা

‘বিদ্রোহী’ কবিতা মূলত আত্মজাগরণের কবিতা। মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। এমন একটি সুদৃঢ় আত্মবিশ্বাসের জয়গান ‘বিদ্রোহী’ কবিতার চরণে চরণে সুস্পষ্টরূপে দেদীপ্যমান। আত্মমুক্তির মাধ্যমে জগৎ ও জীবনকে স্বাধীনতার স্বাদ উপলব্ধি করানো যায়। কবিতাটিতে ১২১ বার ‘আমি’ শব্দ ব্যবহার করে কবি একটি কথারই প্রতিধ্বনি করতে চেয়েছেন যে, মানুষ অসম শক্তির অধিকারী। সাধনা ও সংগ্রামে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে স্বপ্নের স্বাধীন দেশ বিনির্মাণ সম্ভব। সাম্য, সত্য, সততা, অসাম্প্রদায়িকতা ও ন্যায়নির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠায় এ কবিতার অবদান বিশ্ববিশ্রুত।

বিদ্রোহী কবিতায় নজরুলের বিদ্রোহী চেতনার প্রকাশ ঘটেছে। নজরুল বিদ্রোহ করেছেন ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে, শৃঙ্খলপরা আমিত্বের বিরুদ্ধে। এই কবিতারচনার জন্য নজরুল ‘বিদ্রোহী কবির আখ্যা পেয়েছেন।

বিদ্রোহী কবিতা – কাজী নজরুল ইসলাম।

বল বীর-
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি আমারি,
নত-শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!

বল বীর –
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া,
খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাত্রীর!
মম ললাটে রুদ্র-ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!

বল বীর –
আমি চির-উন্নত শির!
আমি চিরদুর্দ্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা-প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস,
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর!

আমি দুর্ব্বার,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার!
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃংখল!
আমি মানি নাকো কোনো আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম,

ভাসমান মাইন!
আমি ধূর্জ্জটী, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর!
আমি বিদ্রোহী আমি বিদ্রোহী-সূত বিশ্ব-বিধাত্রীর!

বিদ্রোহী কবিতার মূলভাব | বিদ্রোহী কবিতা ব্যাখ্যা

বিদ্রোহী কবিতার মূলভাব | বিদ্রোহী কবিতা ব্যাখ্যাঃ কাজি নজরুল ইসলাম তাঁর ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে এক তীব্র আলোড়ন উপস্থিত করেন। একদিকে এই কবিতা পড়ে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের মতো প্রতিভা কবিকে স্বাগত জানান, আপামর জনসাধারণ নজরুলকে তাদের প্রাণের কবি হিসাবে বরণ করে নেন। অন্যদিকে কবি ব্রিটিশ সরকারের ক্রোধ-দৃষ্টিতে পড়েন, সজনীকান্ত দাসের নেতৃত্বে তাঁর বিরোধী এক কবি-সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয় যারা ব্যঙ্গে, বিদ্রূপে কবিকে অস্থির করে তোলেন।

কবি ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় যে বিদ্রোেহ উপস্থিত করেছেন এবং ‘আমি’ বলে যে শক্তিকে মূর্ত করে তুলেছেন তার প্রকৃতি সম্বন্ধে বিরোধী ব্যাখ্যাই কবিতাটি সম্পর্কে এই মিশ্র প্রতিক্রিয়ার কারণ। সুতরাং প্রথমেই কবি ‘আমি’ বলতে কী বলতে চেয়েছেন তা বোঝবার চেষ্টা করা দরকার।

‘আমি’ বলতে প্রাথমিকভাবে কবি নিশ্চয়ই তাঁর ব্যক্তিগত পরিচয়ই তুলে ধরতে চাইছেন, কিন্তু এই পরিচয়কে কবির প্রাত্যহিক জীবনের ধূলি-মলিন পরিচয় ভাবলে অবিচার করা হবে। প্রত্যেক আত্মসচেতন ব্যক্তির মধ্যে থকে দুটি সত্তা—একটি তার প্রতিদিনের পরিচয় বহন করে, আর একটি তার বিরাটত্বের পরিচয়বাহী। প্রাত্যহিক সত্তার থাকে অহংকার, বৃহত্তম সত্তার থাকে অহংবোধ । রবীন্দ্রনাথ এই দুটি সত্তাকেই বোঝাতেই চেয়েছেন ‘ক্ষুদ্র-আমি’ ও ‘বিরাট আমি’ বলে। দর্শনের ভাষায় বলা যায় এই ‘বিরাট-আমি’ মানুষের এক ধরনের ‘ego’ বা আত্মব্যক্তিত্ব । এই অহংবোধ মানুষের মধ্যে অকস্মাৎ জাগ্রত হয়ে তাকে এক বিরাট মানসিক শক্তি দান করে। রবীন্দ্রনাথ নিজেও একদিন এই শক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘প্রভাত সংগীতের’ কবিতাগুলি রচনা করেন। নজরুল ইসলাম মনের মধ্যে সেই শক্তির প্রেরণাতেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন এবং নিজের সেই বৃহত্তর সত্তাকে প্রকাশ করেছেন ‘আমি’ হিসাবে।

কিন্তু ‘আমি’ বলতে শুধুই ব্যক্তিগতভাবে কবিকে মনে করা ঠিক হবে না—এ ‘আমি’ কোনো বিশেষ ‘আমি’ নয়, এর পরিচয় আরও বিস্তৃত। কবি এখানে নতুন যুগের মানুষের চিত্তজাগরণের অগ্রদূত, তিনি শুধু নিজের মুক্তিই অনুভব করেননি—তাঁর মনে প্রাণে জেগেছে নিপীড়িত মানুষদের মুক্তির স্বপ্নে উদ্বুদ্ধ করার নেশা। কবি কেবলমাত্র নিজে স্বাধীন, একথা উচ্চারণ করেননি, তিনি সদ্য জাগ্রত মানুষের অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে তাদেরও চিত্তজাগরণের মন্ত্রপাঠ করিয়েছেন। কবিতার প্রথমেই তিনি ওই সব জাগ্রত চেতনায় মানুষকে আহ্বান করে বলেছেন—

বল বীর

চির উন্নত মম শির।

সুতরাং এর পর ‘আমি’ হিসাবে যে কথা তিনি বলতে চেয়েছেন সে আমি কেবল কবি হতে পারেন না—সে আমি আসলে মুক্তি পাগল প্রতিটি মানুষ। কবির সংকল্প প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেকটি মানুষেরই সংকল্প। সুতরাং আমি বলতে শুধুমাত্র কবি নিজে নন, তিনি যাদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়েছেন তাদেরও বোঝানো হয়েছে।

কবি এখানে যে বিদ্রোহের কথা শুনিয়েছেন তার সঠিক প্রকৃতি বোঝা সহজ নয়, কারণ কবি সমগ্র কবিতাতেই উচ্ছ্বসিত। কখনো তিনি ধ্বংসের কথা বলেছেন, কখনো বলেছেন ত্রাস সঞ্চারের কথা, কখনো পৌরাণিক ঋষির সঙ্গে নিজের তুলনা করেছেন, কখনো বা অন্তরের অন্তঃস্থলে হয়েছেন রোমাতি। বিচ্ছিন্নভাবে চিন্তা করলে বলা যায়, কবির বিদ্রোহ ঘন ঘন দিক পরিবর্তন করেছে–কখনো তিনি দৈব-প্রভাব ক্ষুণ্ণ করতে চেষ্টা করেন, কখনো তিনি পৃথিবীর সমস্ত নিয়মকানুন ধ্বংস করার চেষ্টা করেন, কখনো সৃষ্টিকেই করতে চান ধূলিসাৎ, আবার কখনো তাঁর বিদ্রোহ পৃথিবীর ক্ষত্রিয় জাতির প্রতি, রণদুর্মদ শক্তির প্রতি, যে-কোনো অত্যাচারী প্রভুত্বের প্রতি। কবির এই বিদ্রোহকে বিচ্ছিন্নভাবে না দেখে এক কথায় প্রকাশ করতে গেলে বলতে হবে, তাঁর এই বিদ্রোহ মানুষের যে কোনো ধরনের পরাধীনতার বিরুদ্ধে। মানুষকে সর্বক্ষেত্রে স্বাধীন করবার জন্যই তাঁর এই উদার আহ্বান। মানুষের পরাধীনতা শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নয়–নৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, সব ক্ষেত্রেই তার বশ্যতা এবং অবসাদ থাকতে পারে; সেই সর্বক্ষেত্রের অবসাদ ও অধীনতা দূর করার জন্যই কবি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। তাই ক্ষত্রিয়কে নির্মূল করার কথাও যেমন কবি বলেন, তেমনি একথা বলতেও তাঁর বাঁধে না—

আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান্ বুকে এঁকে দেবো পদচিহ্ন।

সুতরাং কবির এই বিদ্রোহকে অবসন্ন ও পরাধীন মানুষকে সর্বক্ষেত্রে উন্নত চিত্ত স্বাধীন করার এক বলিষ্ঠ আহ্বান মনে করা যেতে পারে।

কবির বিদ্রোহের প্রকৃতি সঠিকভাবে বুঝতে পারলে বিদ্রোহের লক্ষ্যবস্তু কে, সে কথা বোঝাও কঠিন হবে না। মানুষকে যেসব শক্তি অবদমিত করে রেখেছে, উৎপীড়নের চাপে তার স্বাধীন সত্তা বিকাশের পথ রুদ্ধ করেছে—তারই বিরুদ্ধে কবির বিদ্রোহ। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষের মানুষের স্বাধীনতা গুঁড়িয়ে দিয়েছে উৎপীড়নের চাপে, তাই কবি সগর্বে বলেছেন—

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দনরোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না

অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণভূমে রণিবে না

বিদ্রোহী রণক্লস্ত

আমি সেই দিন হব শাস্ত।

কিন্তু মানুষের অধীনতা শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নয়, ধর্মীয় অত্যাচারও মানুষের চিত্তকে অবসাদগ্রস্ত করে রাখে, তাই কবি দেবতার বিরুদ্ধে তাঁর বিদ্রোহের কথা ঘোষণা করেছেন, বলেছেন তিনি বিশ্ব-বিধাত্রীর বিদ্রোহী সূত-গোলক ভেদ করে তাঁর উন্নত শির মহাকাশের ওপরে গিয়ে পৌঁছবে।

এই পৃথিবীতে সামাজিক সংস্কারও পদে পদে মানুষকে শৃঙ্খলিত করছে। তাই কুসংস্কারের অন্ধতায় ভরা এই পৃথিবীর বিরুদ্ধেও তাঁর বিদ্রোহ। তিনি বলেন—

আমি দাবানল দাহ, দাহন করিব বিশ্ব।

অন্যত্র তিনি বলেছেন—

আমি উপাড়িফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে।

লক্ষণীয়, তিনি বিদ্রোহ করবেন শুধু ধ্বংস করতে নয়, তাকে শুদ্ধ করতেও। পৃথিবীকে তিনি দহন করতে চান শুধু ধ্বংসের কারণে নয়, তাকে অগ্নিশুদ্ধ করার কারণে, পৃথিবীকে উৎপাটিত করতে চান নবসৃষ্টির জন্যই। এখানেই কবির বিদ্রোহের সার্থকতা।

বিদ্রোহী কবিতার পটভূমি

বিদ্রোহী কবিতা

বিদ্রোহী কবিতার পটভূমিঃ ১৯১৪ সাল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দাবানলে দাউদাউ করে জ্বলছে গোটা পৃথিবী। ভারতীয় উপমহাদেশ তখন ব্রিটিশ শাসনে ও শোষণে ক্ষতবিক্ষত। কাজী নজরুল ইসলামের বয়স তখন ১৯ বছর সাত মাস। তিনি সেনাবাহিনীর এক তেজোদীপ্ত সৈনিক তখন।

কুচকাওয়াজের সঙ্গে শত্রুকে ধ্বংস করার শিক্ষা-দীক্ষা ও প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রতিটি মানুষই যে বীরযোদ্ধা, অসম-সাহস ও শৌর্য-বীর্যের অধিকারী এ-বোধ তখনই সৃষ্টি হয়েছিল তার। আত্মসচেতন কবির মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল অদম্য সাহস। চিরস্পৃহা সৃষ্টি হয়েছিল, নিপীড়িত-নির্যাতিত, শোষিত-উপেক্ষিত বঞ্চিত মানুষের ব্যথা-বেদনামুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার। যে-কারণে তিনি মানব সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে ওঠেন নিজে নিজেই। অন্তরাত্মার এই অব্যক্ত অভিপ্রায়ই তাকে অসাধারণভাবে আন্দোলিত করেছিল। আর তখনই ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মতো এমন কালজয়ী কবিতা সৃষ্টি হয়।

নজরুল কিশোর বয়সেই দেখেন বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫) ও বঙ্গভঙ্গ রদ (১৯১১) আন্দোলন। অর্থাৎ একটি সংগ্রামী সময়ে তার জন্ম (১৮৯৯) ও শৈশব-কৈশোর এবং যৌবন অতিক্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ ‘বিদ্রোহী’ কবিতার রচনাকাল ছিল সারা পৃথিবীর জন্য অস্থির সময়। তা ছাড়া ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাধীনতার জন্য তখন ঘরে ঘরে দুর্দমনীয় আন্দোলন চলছে। দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য ধর্মমত নির্বিশেষে সর্বস্ব ত্যাগে প্রস্তুত।

এমনি একমুহূর্তে পরাধীন দেশের সময়ের প্রয়োজনে কাজী নজরুল ইসলাম রচনা করলেন তার অমর কবিতাখানি; যে কবিতা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালি জাতি পেল বিদ্রোহের নতুন ভাষা। যুদ্ধ জয়ের নেশায় উন্মত্ত হলো আবালবৃদ্ধবনিতা। আত্মবিশ্বাসের অভাবে যে জাতির চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস ছিল না, যে জাতি ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বিনা প্রতিরোধে স্বাধীনতা হারিয়েছিল, সেই জাতি ‘বিদ্রোহী’ কবিতা পড়ে অসীম আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠল। কবি কণ্ঠের দৃপ্ত উচ্চারণের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ভারতবাসী গেয়ে উঠল- ‘আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমারে খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ।’

বিদ্রোহী কবিতা pdf | বিদ্রোহ কবিতা কাজী নজরুল ইসলাম pdf | Bidroho kobita pdf download বিদ্রোহী কবিতা download

বিদ্রোহী কবিতা pdf download করুন। | বিদ্রোহ কবিতা কাজী নজরুল ইসলাম pdf download করুন | Bidroho kobita pdf download করুন। বিদ্রোহী কবিতা [ Download PDF ]

বিদ্রোহী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

বিদ্রোহী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরঃ

সৃজনশীল প্রশ্ন :
আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুনঃ মহাবিপ্লব হেতু
এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু!
সাত-সাতশ নরক-জ্বালা জলে মম ললাটে।
মম ধূম-কুণ্ডলী করেছে শিবের ব্রিনয়ন ঘন ঘোলাটে ।
আমি সুষ্টার বুকে সৃষ্টি পাপের অনুতাপ-তাপ হাহাকার
আর মর্ত্যে শাহারা- গোবী-ছাপ
আমি অশিব তিক্ত অভিশাপ ।

ক. কবি কী মানেন না?
খ. “যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না’- একথা বলার কারণ কী?
গ. উদ্দীপকের সাথে “বিদ্রোহী’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি “বিদ্রোহী’ কবিতার সমগ্রভাব ধারন করেনা*- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন : পিচ্চিরা এমনি ঘুরে বেড়ায়, কোথাও ৭/৮ জনের একটি গ্রুপ, কোথাও ৫/৬ জনের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের মিছিল। মিছিলে স্লোগান দিচ্ছে, ‘আইয়ুব শাহী, মোনেম শাহী— ধ্বংস হোক, ধ্বংস হোক’, ‘আইয়ুব মোনেম ভাই ভাই– এক দড়িতে ফাঁসি চাই।” আবার মাঝে মাঝে স্লোগান ভুলভাল হয়ে যায়। যেমন— ‘আইয়ুব শাহী, জালেম শাহী’- এর জবাবে বলছে, ‘বৃথা যেতে দেবো না।’ কিংবা ‘শহীদের রক্ত’— এর জবাবে বলছে, ‘আগুন জ্বালো আগুন জ্বালো।’

ক. ‘কুর্নিশ’ কথাটির মানে কী?
খ. ‘আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল। – ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের কোন দিকটি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মূলভাবের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেছে কি? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন :
বিদ্রোহ আজ বিদ্রোহ চারিদিকে,
আমি যাই তারি দিন-পঞ্জিকা লিখে,
এত বিদ্রোহ কখনো দেখে নি কেউ,
দিকে দিকে ওঠে অবাধ্যতার ঢেউ;
স্বপ্ন-চূড়ার থেকে নেমে এসো সব—
শুনেছ? শুনছ উদ্দাম কলরব? নয়া ইতিহাস লিখছে ধর্মঘট;
রক্তে রক্তে আঁকা প্রচ্ছদপট।
প্রত্যহ যারা ঘৃণিত ও পদানত, দেখ আজ তারা সবেগে সমুদ্যত;

ক. ‘নতশির’ মানে কী?
খ. বীরের শির চির-উন্নত কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি কোন দিক থেকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দিকে দিকে ওঠা অবাধ্যতার ঢেউ কি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কবির বিদ্রোহী চেতনার সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন : আমরা প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করতাম। সব সময় মনে হতো কেউ যেন দরজায় কড়া নাড়ছে। ঘুমের ভেতর চিৎকার করে উঠতাম কোনো কোনো রাত। বধ্যভূমির ধারে বেঁধে রাখা জীবজন্তুর অনুরূপ আমরা আতঙ্ককে জেনেছি নিত্যসঙ্গী বলে । এমন কোনো দিনের কথা মনে করতে পারি না, যেদিন হত্যা কিংবা ধর-পাকড়ের কোনো না কোনো খবর কানে না আসত।

ক. ‘সুত’ অর্থ কী?
খ. “আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাত্রীর।”— ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সঙ্গে কোন দিক থেকে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার একটি বিশেষ দিকের বৈপরীত্য লক্ষ করা যায়, সামগ্রিক বিষয়ের নয়।” -মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন :
রক্তে জ্বলছে লক্ষ সূর্যশিখা;
পশুরা ছিঁড়েছে আমার মাতৃভূমি।
এ দুঃসময়ে পেছনে ডেকো না কাউকে ভুলেও তুমি। একদিকে জ্বলে চেতনা অন্যদিকে জ্বলে জনপদ
সোনার বাংলা জ্বলছে আগুনে চারদিকে শুধু হিংস্র শ্বাপদ
পথে প্রান্তরে মাংসাশী নেকড়েরা;
ধর্মের নামে পাশবিকতায় উন্মত্ত যে পঙ্গপালেরা—
এখন এদেশে এইসব পশু হত্যার মওসুমী
এ দুঃসময়ে কাউকে পেছনে কখনো ডেকো না তুমি।

ক. ‘মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত’-এর পরের লাইন কী?
খ. কবি কখন শান্ত হওয়ার কথা বলেছেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কোন দিককে নির্দেশ করেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মিল থাকলেও উদ্দীপকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার চেতনার পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি। মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ কর।

উত্তর ডাউনলোড করো

কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি

কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তিঃ

বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি সব্যসাচী

কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি সব্যসাচী দেখেতেঃ বিদ্রোহী কবিতা [ ক্লিক করুনঃ ] 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

Leave a Reply

লেখক থেকে আরো