নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় স্ত্রীর পরকীয়া সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রতাব কুমার সাহা (৩৮) নামে এক ব্যক্তি।
গতকাল বুধবার রাতে উজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের দোরাজপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত প্রতাব কুমার সাহা পেশায় একজন মোটরসাইকেল মেকার ছিলেন । পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
এলাকাবাসীরা জানান, মোহনপুর উপজেলার দোরাজপাড়া গ্রামের মৃত মন্দ্রিনাথ সাহার ছেলে প্রতাব কুমার সাহার সাথে রংপুর জেলার পীরগঞ্জের দীলিপ কুমার সাহার মেয়ে তাপসি রানী সাহার প্রায় ৬ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের পাঁচ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পাশের নওনগর গ্রামের আতাউর কাজীর ছেলে হাফিজ নামের এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্র নিহত প্রতাব কুমার সাহার ছেলে প্রান্ত কুমার সাহাকে বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট পড়াতেন। এক পর্যায়ে প্রাইভেট শিক্ষকের সাথে নিহত প্রতাব কুমার সাহার স্ত্রী পরকীয়ার জড়িয়ে পড়েন।
পরে প্রতাব কুমার সাহা তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন। পরে ৫ বছেরর একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে পুনরায় স্ত্রীকে তার বাড়ীতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু বাড়ীতে ফিরেও স্ত্রীর পরোকিয়া বন্ধ হয়নি। বিষয়টি এলাকায় জানা জানি হলে হলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় প্রতাব কুমার সাহার মনে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। গত বুধবার রাত ১১ টায় সময় স্বামী-স্ত্রী ও পাঁচ বছরের ছেলে প্রান্ত কুমার সাহাকে নিয়ে প্রতিদিনের মত ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১ টায় পর যেকোন সময় পাশের রুমে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে প্রতাব কুমার সাহা। নিহতের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই বলে জানান পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ভোরে স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন প্রতাব কুমার সাহার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলোক বিশ্বাস মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এদিকে স্ত্রীর পরকীয়ায় স্বামীর আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে নিহত প্রতাব কুমার সাহার স্ত্রী তাপসি রানী সাহা পরকীয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। প্রাইভেট শিক্ষক হাফিজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রতাব কুমারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের ছোট ভাই সুজল কুমার সাহা বাদি হয়ে থানায় ইউডি মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।