ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সর্বোত্র নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, ভেসাল ও চায়না জাল দিয়ে অবাদে মৎস্য শিকার করছে কিছু অতি লোভী মৎস্য শিকারীরা। ফলে বিলুপ্তি ও চরম হুমকিতে রয়েছে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও মাছের রেনু পোনাসহ বিভিন্ন প্রকার জলজ প্রাণী। নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের পর এবার শুরু হয়েছে কারেন্ট জালের চেয়েও সূক্ষ্ম চায়না জালের ব্যবহার। চায়না জাল ও কারেন্ট জালে নদ-নদী, খাল-বিল জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে। এতে প্রাকৃতিক সব ধরনের দেশীয় মাছ ধরা পড়ছে। ডিমওয়ালা মাছসহ সব ধরনের মাছ ছেঁকে উঠে আসে এই চায়না জালে। এতে করে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে নদ-নদী, খাল-বিল ও ছোট নদীগুলো।
দীর্ঘদিন ধরে এলাকার এক শ্রেণীর লোকজন বাজার থেকে চায়না জাল ও কারেন্ট জাল কিনে নদীতে অবাধে মাছ শিকার করে যাচ্ছে। প্রতিদিনই মাছ ধরার এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। কেউ কেউ নদীর পাড়ে টং ঘর বানিয়ে একেবারে জেঁকে বসেছেন। সন্ধা রাতে কারেন্ট জাল ও চায়না জাল নদীতে পেতে রাখে পরদিন খুব ভোরে জাল উঠিয়ে মাছ শিকার করে ফলে সহজে সবার চোখে পরে না।
জালে ধরা পড়ে বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছগুলো। শুধু মাছই নয়, নদীতে থাকা কোনো জলজ প্রাণীও রক্ষা পাচ্ছে না। এমনকি মাছের ডিমও ছেঁকে তোলা হয় চায়না জাল দিয়ে। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের মধ্যে চিংড়ি, পুটি, রুই-কাতলা, টেংরা, কই, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকি থেকে শুরু করে ছোট বড় কোন মাছই রেহাই পাচ্ছেনা এই নিষিদ্ধ জাল থেকে। মাছের সাথে বিভিন্ন ধরণের কাকড়া, কচ্ছপ, কুচিয়া, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ছাড়াও পানিতে বাস করা বিভিন্ন প্রজাতির উপকারি পোকামাকড় ও জালে আটকে যাচ্ছে, ডাঙ্গায় তুলে সেসব প্রাণী ও পোকা মাকড় মেরে ফেলছে এসব মাছ শিকারীরা।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, এভাবে মাছ শিকার করা ঠিক না। এভাবে চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরলে কিছুদিন পর নদীতে আর কোনো মাছ পাওয়া যাবে না। এসব মৎস্য শিকারীরর জন্য বাজারে এখন দেশীয় মাছ পাওয়া যায় না। নদীতে এখন দেশীয় প্রজাতির মাছ পোনা ছাড়ছে এখনই এই কারেন্ট জাল ও চায়না জালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসার রাজিব রায় বলেন, সকল প্রকার নিষিদ্ধ ‘কারেন্ট জাল ও চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা বে-আইনী কাজ। মাছ শিকারে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার না করার জন্য প্রচার প্রচারণা চলমান রয়েছে। আমরা দ্রুতই সকল প্রকার নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, এই নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। প্রচলিত আইনে খুব দ্রুত এই নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।



